রবিবার ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   রবিবার ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


বৈরুতে জাহাজ ভর্তি ভয়াবহ বিস্ফোরকের চালান পৌঁছাল যেভাবে
প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০২০, ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

বৈরুতে জাহাজ ভর্তি ভয়াবহ বিস্ফোরকের চালান পৌঁছাল যেভাবে

মুক্তধারা ডেস্কঃ

লেবানন সরকার বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের জন্য বন্দরের গুদামঘরে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোয়িাম নাইট্রেটের মজুতে আগুন ধরে যাওয়াকে দোষারোপ করেছে। এত বিশাল পরিমাণ ভয়ানক দাহ্য পদার্থ ছয় বছরের ওপর শহর কেন্দ্রের এত কাছে কোন নিরাপদ ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে গুদামঘরে কীভাবে রেখে দেয়া হল তা নিয়ে দেশটির জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে।

যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে বন্দর নগরীর বিস্তীর্ণ জনপদ তার উৎসের নাম সরকার না করলেও অনেক তথ্য জানা গেছে। মলডোভিয়ান পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রোসাস ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে ঠিক ঐ পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়ে বৈরুতে নোঙর করেছিল। মালিকানাধীন জাহাজটি জর্জিয়ার বাটুমি থেকে যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। সেটির গন্তব্য ছিল মোজাম্বিকের বেইরা। জাহাজটিতে ছিল ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। এই রাসায়নিক সাধারণত আসে ছোট গোল টুকরোর আকারে। কৃষিকাজে সারের জন্য এই রাসায়নিক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে জ্বালানি তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এটা দিয়ে বিস্ফোরক তৈরি করা যায়, যা খনিতে বিস্ফোরণের কাজে এবং নির্মাণ শিল্পে ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগর দিয়ে যাবার সময় রোসাস জাহাজটিতে কিছু কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়ে এবং জাহাজটি বৈরুত বন্দরে নোঙর করতে বাধ্য হয়। এই তথ্য এসেছে জাহাজ শিল্পের সাথে জড়িত ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদনে, যেটি শিপিং অ্যারেস্টেডডটকম নামে একটি নিউজলেটারে প্রকাশিত হয়েছিল। ঐ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বৈরুত বন্দরের কর্মকর্তারা রোসাস জাহাজটি পরিদর্শন করেন এবং সেটিকে সমুদ্র যাত্রার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন লেবানীজ আইনজীবীরা। জাহাজের বেশিরভাগ কর্মীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়। শুধুমাত্র থেকে যায় জাহাজের রুশ ক্যাপ্টেন বরিস প্রোকোশেফ এবং আরও তিনজন, যারা ইউক্রেনিয়ান বলে পরিচিত।

এদিকে প্রোকোশেফ বৃহস্পতিবার রয়টার্স কে বলেন, লিকেজের কিছু সমস্যা হচ্ছিল কিন্তু জাহাজটির সমুদ্র যাত্রার জন্য কোন সমস্যা ছিল না। তিনি আরও বলেন, জাহাজটির মালিক জাহাজটিকে বৈরুতে পাঠান সেখান থেকে ভারী যন্ত্রপাতির বাড়তি কিছু মাল জাহাজে তোলার জন্য। উদ্দেশ্য ছিল দেশটির অর্থনৈতিক অসুবিধার মধ্যে তাদের সহায়তা করা।

কিন্তু জাহাজের কর্মীরা ওইসব ভারী যন্ত্রপাতি নিরাপদে জাহাজে তুলতে পারেনি। এরপর জাহাজের মালিক বন্দরের যে ভাড়া তা যখন দিতে ব্যর্থ হন, তখন লেবাননের কর্তৃপক্ষ জাহাজটি সেখানে জব্দ ক’রে সেটি বসিয়ে দেয় বলে তিনি জানান। এর অল্প কিছুদিন পর, রোসাস-এর মালিক জাহাজটি সেখানে পরিত্যাগ করেন।

আইনজীবীরা বলছেন মালবাহী জাহাজটি যারা চার্টার বা ভাড়া করেছিলেন এবং জাহাজটি নিয়ে যারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তারা সব পক্ষই জাহাজটি নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

জাহাজের ভেতর তখনও যেসব নাবিক ও কর্মী ছিলেন তাদের রসদ ও খাবার দ্রুত ফুরিয়ে আসছিল। আইনজীবীরা বলেছেন তারা বৈরুতের জরুরিকালীন বিচারকের কাছে আবেদন করেন, যাতে ঐ ক্রু-দের নিজেদের দেশে ফিরে যাবার অনুমতি দেয়া হয়। আইনজীবীরা বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেন ওই জাহাজে যে রাসায়নিক রয়েছে তা খুবই বিপজ্জনক প্রকৃতির এবং নাবিকরা জাহাজে ঝুঁকির মধ্যে থাকছেন।

বিচারক শেষ পর্যন্ত ক্রুদের জাহাজ থেকে নামার অনুমতি দেন এবং ২০১৪ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজ থেকে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের চালান “১২ নম্বর ওয়্যারহাউস”এ স্থানান্তরিত করেন। ওই গুদামঘরটি ছিল বিশাল শস্য গুদামগুলোর পাশে।

বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার হাসান কোরায়েতেম এবং লেবাননের শুল্ক বিভাগের মহাপরিচালক, বদরি দাহের, দুজনেই বলছেন, তারা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা বিচারবিভাগকে সেখানে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত রাখার বিপদ সম্পর্কে বারবার সতর্ক করে করেছিলেন। অনলাইনে যেসব নথিপত্র পোস্ট করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে শুল্ক কর্মকর্তারা বৈরুতের বিচারকের (জাজ অফ আর্জেন্ট ম্যাটারস্) কাছে চিঠি লিখে কীভাবে ওই চালান বিক্রি করে দেয়া যায় বা নষ্ট করে ফেলা যায় সে বিষয়ে নির্দেশ চেয়েছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালে মধ্যে তারা অন্তত ছয়বার এ ব্যাপারে চিঠি লিখেছেন।

গণপূর্ত মন্ত্রী মিশেল নাজির, যিনি এ বছরের শুরুতে দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি আল জাজিরা টিভিকে বলেছেন এ বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে তিনি প্রথম বন্দরে এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের উপস্থিতির কথা জানতে পারেন। তিনি সোমবার কোরায়েতেমের সাথে এ নিয়ে কথা বলেন।

এর পরের দিনই, মঙ্গলবার অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ওই গুদামে আগুন থেকে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

 

প্রকাশক ও সম্পাদক
মোঃ আজিম হোসেন
ঠিকানাঃ আ: করিম ভবন, রাড়িমহল, চরবাড়িয়া, বরিশাল সদর উপজেলা, বরিশাল।

 

যোগাযোগ
মোবাইলঃ 01782212626
মেইলঃ msuhad@gmail.com

Design & Developed by
  ভারতে করোনা পরিস্থিতির ফের অবনতি   বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যুর সবশেষ   এবার নেপালের জন্য আম উপহার পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   বাংলাদেশিদের জন্য ব্রিটেনে মাস্টার্স প্রোগ্রামে বৃত্তি ঘোষণা   দাড়ি কামাতে মোদিকে ১০০ টাকা পাঠালেন চা বিক্রেতা   ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ইসরায়েলের হামলা   ইসরাইলকে হুশিয়ারি ফিলিস্তিনের   এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক   ‘বক্সিং ডে টেস্ট’ আসলে কী?   কাতারে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বাংলাদেশি নারী উদ্যোক্তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ   সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করল সৌদি   মোসাদের নতুন পরিচালক ‘ডি’ কে?   গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করছে যুক্তরাষ্ট্র   হাসিনা-মোদি বৈঠকে স্বাক্ষর হতে পারে ৯টি সমঝোতা স্মারক   ৬১০ মাদরাসা বন্ধ করে দিচ্ছে ভারত   শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল বৈঠক ১৭ ডিসেম্বর   বাইডেনের কাছে অলৌকিক কিছু চায় না ইইউ, তবে…   এবার আমেরিকার ক্রিকেট লিগে বিনিয়োগ করছেন শাহরুখ   করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার মধ্যেই নিউইয়র্কে খুলছে স্কুল   বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর আটজনই প্রযুক্তিখাতের উদ্যোক্তা