‘পাকিস্তান আমাদের দেখে আক্ষেপ করে, এটাই স্বার্থকতা’
|
![]() মুক্তধারা ডেস্কঃ ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অকপটে স্বীকার করেন সব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। কার্যত অনেক সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এটাই আমাদের স্বার্থকতা পাকিস্তান আমাদের দেখে আক্ষেপ করে।’ এমন মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। শুক্রবার মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত বীর উত্তমের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ওই সভার আয়োজন করে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বার্থকতা সেখানেই। বঙ্গবন্ধুর স্বার্থকতা সেখানেই, জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বার্থকতা সেখানেই যে পাকিস্তানিরা আমাদের দেখে আক্ষেপ করে। আর এটি সম্ভব হয়েছে কারণ আমাদের এখানে আমরা সাম্প্রদায়িকতাকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেইনি। সাম্প্রদায়িকতা রাষ্ট্রকে কুড়ে কুড়ে খায়। সুতরাং সাম্প্রদায়িকতাকে কোনোভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ রচিত হয়েছে। এ চেতনাকে আমরা ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে পারি না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সময়ে সময়ে গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক হানাহানি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সরকার গুজব কঠোর হস্তে দমন করেছে। ভবিষ্যতেও তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। অমুসলিমদের উদ্দেশে এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মাটি আপনাদের, এই দেশ আপনাদের। আপনারা এই মাটির সন্তান। সুতরাং এখানে কেউ চোখ রাঙালে সেখানে পাল্টা চোখ রাঙাতে হবে। তাহলেই নিজের স্বার্থটাকে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।’ চলতি বছরের ২৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মারা যান মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত বীর উত্তম। তার জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি অসমের শিলংয়ে। তিনি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘হিন্দু- মুসলিম- বৌদ্ধ- খ্রিস্টান সবার মিলিত রক্ত স্রোতের বিনিময়ে দেশ অর্জিত হয়েছে। সেই দেশ আজ সব সূচকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যদি পাকিস্তানের দিকে তাকাই, সেখানে তো সবাই মুসলমান। কিন্তু সেখানে যে ধর্মীয় উগ্রবাদ, মুসলমানদের মধ্যে যে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব এবং অন্যান্য যে দ্বন্দ্ব সেই দ্বন্দ্বের কারণে পাকিস্তানের অস্তিত্ব আজকে হুমকির সম্মুখীন।’ তিনি বলেন, মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত হিন্দু হয়েও ‘৬৫ সালে পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন অর্থাৎ তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন। তিনি একজন সত্যবাদী ও নিরহংকার মানুষ ছিলেন। স্মরণসভার শুরুতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থার পক্ষ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের এই বীরের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তার জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি তথ্যচিত্র পরিবেশন করা হয়। এর পর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদে অন্যতম সভাপতি উষাতন তালুকদার, নিম চন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও, সাংবাদিক স্বপন কুমার সাহা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলন্দ্রেনাথ মজুমদার। |