সংসদে কম্পানি আইন সংশোধনী বিল পাস
|
![]()
মুক্তধারা ডেস্কঃ জাতীয় সংসদে ‘এক ব্যক্তি কম্পানি’ খোলার সুযোগ দিয়ে ১৯৯৪ সালে প্রবর্তিত কম্পানি আইন সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ‘কম্পানি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল-২০২০’ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বুধবার রাতে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটির ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা। তাদের দেওয়া জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তাদের আনা বিলের ওপর আনীত সংশোধনী প্রস্তাবগুলোও গৃহীত হয়নি। এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। আগের আইন অনুযায়ী প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানি পরিচালিত হয় পর্ষদের মাধ্যমে। পর্ষদ বা বোর্ডের পরিচালক ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। পাস হওয়া বিলের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘এক ব্যক্তির কম্পানি’ হলো সেই কম্পানি, যার বোর্ডে সদস্য থাকবেন কেবল একজন। বিলে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তি কম্পানির পরিশোধিত শেয়ার মূলধন হবে অন্যূন ৫০ লাখ টাকা ও অনধিক ১০ কোটি টাকা। অব্যবহিত পূর্ববর্তী অর্থবছরের বার্ষিক টার্নওভার অন্যূন ২ কোটি টাকা ও ১০০ কোটি টাকা হবে। পরিশোধিত শেয়ার মূলধন এবং বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ বেশি হলে শর্তপূরণ সাপেক্ষে এক ব্যক্তির কম্পানিকে প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানি বা ক্ষেত্রমত পাবলিক লিমিটেড কম্পানিতে রূপান্তর করা যাবে। পরিচালক এবং প্রধান ব্যক্তি একজন থাকেন বলে এ ধরনের কম্পানি পর্ষদ সভা করা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নিয়মের ছাড় পাবে। তবে এক ব্যক্তির কম্পানিকে বছরে কমপক্ষে একটি পরিচালক সভা করতে হবে। একমাত্র পরিচালক মারা গেলে সব শেয়ারের মালিক হবেন তার মনোনীত ব্যক্তি। সংশোধিত আইনে এ ধরনের কম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে হস্তান্তরকারীর ব্যক্তিগত উপস্থিতি ও কমিশনের মাধ্যমে হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কম্পানি উঠে গেলে পাওনাদারদের ঋণ পরিশোধে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কম্পানি আইন সংশোধন করে অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধনের বিধান রাখা হয়েছে। বর্তমান আইনে ১৪ দিনের নোটিসে বোর্ড মিটিং করার বিধান আছে। প্রস্তাবিত আইনে এটাকে ২১ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ অধিকতর সহজীকরণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক ব্যক্তি কম্পানি গঠনের আইনগত বিধান প্রণয়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। মন্ত্রণালয় এক ব্যক্তির বিধান সংযোজন করে কম্পানি আইন-২০২০-এর খসড়া প্রণয়ন করে এবং এর ওপর বিভিন্ন অংশীজন এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ করে। খসড়ার ওপর মতামত গ্রহণের পর খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের ২০ জুলাই মন্ত্রিসভা বৈঠকে খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদিত হয়।’ এ আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হলে ব্যবসার সহজীকরণ সূচকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সূচক বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। |