দুই লক্ষ টাকার গাছ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করলেন সড়ক পরিদর্শক আজিজ!
|
![]() মুক্তধারা প্রতিবেদক: বরিশালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দুই লক্ষ টাকা মূল্যের চারটি গাছ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক পরিদর্শক এর বিরুদ্ধে। আব্দুল আজিজ নামের ওই পরিদর্শক এক মাস পূর্বে তালতলী/শায়েস্তাবাদ সড়কের তালতলী বাজার সংলগ্ন চারটি রেইনট্রি গাছ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। মোহাম্মদ সামিম নামের ওই ব্যবসায়ী গাছ চারটি কেটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর পাশেই রেখে দেন। গত শুক্রবার হঠাৎ করেই ২ লক্ষ টাকা মূল্যের ওই চারটি গাছ ২৫০০০ টাকায় বেঁচে দেন পরিদর্শক আব্দুল আজিজ। ইতিমধ্যে দুইটি গাছ ওই স্থান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে গাছ কাটাও বিক্রি করার অভিযোগ অস্বীকার করে পরিদর্শক আব্দুল আজিজ বলেন তালতলী বাজারের ব্যবসায়ী শামীম নিজ উদ্যোগে গাছগুলো কেটে ফেলেছেন। এরপর কে বা কারা বিক্রি করেছে সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে গাছ কাটার পরে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল আজিজ ব্যস্ত আছি বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মোবাইল ফোন অফ করে রাখে। সরেজমিনে তালতলী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজার সংলগ্ন শামীম বিজনেস পয়েন্টের সম্মুখের চারটি রেইনট্রি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে মাসখানেক আগে। শামীম বিজনেস পয়েন্ট এর মালিক মোঃ শামীম ওই গাছ চারটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরিদর্শক আব্দুল আজিজ এর সহায়তায় কেটে ফেলেন। যার বাজারমূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা। এরপর প্রায় একমাস গাছ চারটি তার দোকানের পাশের্ব একটি খালি মাঠে ফেলে রাখে। মাসখানেক সেখানে পড়ে থাকলেও হঠাৎ করেই গত শুক্রবার থেকে ওই গাছের টুকরোগুলো নিতে থাকে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। শামীম বিজনেস পয়েন্ট এর মালিক মোঃ শামীম জানান, আমি একটি নতুন ভবন করা করেছিলাম। ওই ভবনের সামনেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের তিনটি গাছ ছিল। গাছগুলো আমাকে সড়ক পরিদর্শন আব্দুল আজিজ কাটা নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর গাছগুলো আমার দোকানের পাশেই এক মাস ধরে রাখা হয়েছিল। হঠাৎ করে জানতে পারি ওই গাছগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ী বাচ্চু মল্লিক এর কাছে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। শামীম আরো বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরিদর্শক আব্দুল আজিজ ও অধিদপ্তরের ঠিকাদার পরিচয়দানকারী মোঃ শামীম এই দুজনে মিলে গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ওই গাছ সেই ব্যবসায়ী নিয়ে গিয়েছেন। সবুজ সড়ক ও জনপথ বিভাগের পরিদর্শক আব্দুল আজিজ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শামীম তার দোকানের সামনে তিনটি গাছ কাটার জন্য বেশ কয়েকবার আমার কাছে এসেছিল। তবে অফিস থেকে অনুমতি না হওয়ায় আমি তাকে গাছ কাটার জন্য নিষেধ করেছি। এরপর এসকে গাছ কেটেছে কিনা তাই জানিনা। বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন আজ সোমবার সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন এবং উইক আর যদি বিক্রি করা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিদর্শক আব্দুল আজিজ এর পূর্বেও গাছ বিক্রি কেলেঙ্কারির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। শায়েস্তাবাদ তালতলী সড়কে তাদের ৫০০ উপরে গাছ ছিল। যার অধিকাংশ বিনা টেন্ডারে আব্দুল আজিজ এর সহায়তায় স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল কেটে বিক্রি করে ফেলেছে। সম্প্রতি স্থানীয় তালতলী বাজার ব্যবসায়ী শামীম তার দোকানের সামনে চারটি রেইনট্রি গাছ আজিজ এর সহায়তায় কেটে ফেলে। এই গাছ চারটি ২৫০০০ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে এসেছে। ওই কর্মকর্তা বলেন সড়ক ও জনপদের তালতলী শায়েস্তাবাদ সড়কে শামীম নামে একজন ঠিকাদার রয়েছে। যার বিরুদ্ধে এর আগেও বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে তিনি অফিশিয়াল কোন নির্দেশনা ছাড়াই গাছ কেটে বিক্রি করে ফেলেন। আর তাকে মদদ দে দেন পরিদর্শক আব্দুল আজিজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ আলম বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সকল গাছগুলো পরিদর্শক আব্দুল আজিজ দেখাশোনা করেন। গাছের বিষয়ে তিনি ভাল বলতে পারবেন। তবে দরপত্র ছাড়া কোন গাছ কাটায় কিংবা বিক্রির প্রশ্নই আসে না বলে তিনি জানান। নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন আবদুল আজিজকে তার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। |