মার্কিন অর্থনীতি: বাইডেনের সামনে ৫ চ্যালেঞ্জ
|
![]() মুক্তধারা ডেস্কঃ ১. কিভাবে মার্কিন অর্থনীতিকে সুরক্ষা দেবেন বাইডেন? ভোটের আগে জনসংযোগে বাইডেন বলেছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফ করবেন, সামাজিক সুরক্ষার বলয়ে পেনশন পাওয়াদের অর্থের পরিমাণ বাড়াবেন, ছোট ছোট ব্যবসাতেও অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চান তিনি। আরও কয়েকটি উচ্চাভিলাসী পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণাও রয়েছে তার। যেমন, দূষণমুক্ত পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, অবকাঠামো ও গণ যোগাযোগে ২ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবেন তিনি। তবে, এসব ব্যয়-বিনিয়োগের পথে শক্ত বাধা হয়ে দাঁড়ানোর পূর্ব ঘোষণাও রয়েছে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের। ২. অসমতায় কিভাবে কাজ করবনে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট? তবে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করাও তার জন্য সহজ হবে না, কারণ তার দলের সমর্থকসহ বিরোধী দল রিপাবলিকান ও ব্যবসায়ীরা দাবি করে আসছে উচ্চ করপোরেট করহার অবশ্যই মার্কিন অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ৩. জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাইডেন কি মার্কিনিদের ঐক্যমতে নিয়ে আসতে পারবেন? এখানেও রিপাবলিকানদের পর্যবেক্ষণ, এতে করে পুড়ে যাবে মার্কিন অর্থনীতি। ট্রাম্প যে সব কাজ করেছে সেখান থেকে সরে ছোট সংস্করণে এসব কাজ করতে গেলেও তার ওপর কড়া নজর রাখার স্পষ্ট ঈঙ্গিত রয়েছে রিপাবলিকানদের। যেমন, ট্রাম্পের আমলে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে তেল উত্তোলনকে সমর্থন করা হত, এমনকি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি ঘোষণার তিন বছর পর বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। গেল বুধবার (৪ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০১৭ সালে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা কার্যকর হয়। তাই অপেক্ষাই করতে হবে দক্ষতা ও কর্ম কৌশলে কোন দিকে যান বাইডেন তা দেখার জন্য। ৪. বাণিজ্য যুদ্ধের কি অবসান হবে? বাইডেন বিশ্ব মঞ্চে মিত্র ও নেতা হিসাবে আমেরিকার ভূমিকা পুনরায় জোর দিয়ে পুনর্স্থাপনের বিষয়ে কাজ করবেন এতে তেমন কোন সন্দেহ নাই, কিন্তু দেখার বিষয় ট্রাম্প আমলের থেকে তিনি কতটা পার্থক্য তৈরি করতে পারেন। চীনের প্রসঙ্গে তিনি ‘আক্রমণাত্মক’ পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। তবে, অনেকেই আশা করেন যে তার বাণিজ্য যুদ্ধ কৌশলে ট্রাম্পের সময় চীনা পণ্যের ওপর যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল তা তিনি অপসারণ করবেন। তবে, চীন কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছেই কোন সুবিধা প্রত্যাশা করে না বলে বলা হচ্ছে। বাইডেন, জলবায়ু ও পরিবেশগত বাধ্যবাধকতা পূরণ করে না এমন দেশের ওপর চার্জ (ফি) আরোপে পরিকল্পনার রূপরেখাও তৈরি করেছেন। ট্রাম্পের মতো তিনিও যুক্তরাষ্ট্রে উত্পাদন ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ট্রাম্প কানাডা, ইউরোপসহ অনেক মিত্রকেই শত্রুভাবাপন্ন করে তুলেছেন। এক্ষেত্রে অনেক বৈরিতা নিরসনে বেশ সময় লাগবে বলে ধরা হচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যে কোন চুক্তি করা বেশি কঠিন হবে। এক্ষেত্রে, দ্বাপাক্ষিক বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ে বাইডেনেরও কোন পরিষ্কার ছক কষা নেই। ব্রেক্সিট পরবর্তী বাইডেনের নীতি-কৌশলও তেমন পরিষ্কার নয়। ৫. বাইডেন কি টেক জায়ান্টদের ভাঙবেন? বাইডেনও মার্কিন টেক জায়ান্টদের এই শক্ত প্লাটফর্মকে ভাঙতে চান। এরই মধ্যে পুলিশকে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে সহায়তা না করার অভিযোগ তুলে তিনি ফেসবুক এবং অন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করেছেন। বাইডেন আগেই জানিয়েছেন, তিনি মার্কিন সেই আইনটিকে প্রত্যাহারে সমর্থন করেন যা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহিতা থেকে মুক্ত রেখেছে। তবে, বাইডেন ও তার সহ-সভাপতি কমলা হ্যারিস সিলিকন ভ্যালিতে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন। এবং তারা এই বিষয়ে অস্বাভাবিকভাবে চুপচাপ ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, তারা প্রচারণকালে এমন কোন পদক্ষেপের কথা জানানি। হোয়াইট হাউস প্রতিযোগিতামূলক তদন্ত পরিচালনা, গোপনীয়তা এবং অন্যান্য বিধিবিধান প্রয়োগে নিজস্ব শক্তি প্রয়োগ করে এবং যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশের প্রযুক্তি পণ্যভিত্তিক সংস্থা থেকে আরও বেশি কর আদায়ের চেষ্টা চালানোর বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বাইডেন। সুতরাং, কংগ্রেসে রিপাবলিকান উপস্থিতির কারণে ডেমোক্র্যাটদের উদার ঘাঁটিতে পৌঁছে দেয়ার চাপ থাকায়, বাইডেন কি প্রযুক্তি খাতের নিয়ন্ত্রণ করবেন নাকি বিষয়টিতে পিছনে আসন নেবেন তিনি? এটাই এখন দেখার বিষয়। |