স্টাফরা দালাল, তাই অসহায় রোগীরা
|
![]() মুক্তধারা প্রতিবেদক জেনারেল হাসপাতালের অপর এক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তার। তিনিও লাইফ লাইন হেলথ টিপস জন্য রোগী সরবরাহ করেন। সড়ক ও তিশার কোন দায়িত্ব পালন না করে তিনি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য প্রকাশ্যে কাজ করে থাকেন। তার বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানেন। তুমি অদৃশ্য কারণে প্রায়শই সাধারণ ক্ষমা করা হয় তাকে। কেবল হাসপাতালের এ দুই কর্মচারী নয় চিহ্নিত বেশ কয়েকজন কর্মচারী হাসপাতাল সম্মুখের ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর জন্য প্রকাশ্যে রোগী সরবরাহ করে থাকলেও হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা জেলা সিভিল সার্জন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের স্টাফ নামধারী এই দালালদের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন আবাসিক মেডিকেল অফিসার এর কাছে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। উল্টো রোগীর স্বজনদের বলা হচ্ছে আটপাড়া ভিডিও ফুটেজ নিয়ে আসতে পারলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বেগম শনিবার ডাক্তার আশিকুর রহমান কে দেখানোর জন্য বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে যান। চিকিৎসক তাকে বেশ কয়েকটি টেস্ট করানোর জন্য নির্দেশনা দেন। চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হতেই হাসপাতাল অফিস সহায়ক রুবেল আনোয়ারা বেগমের হাত থেকে প্রেসক্রিপশনটি নিয়ে যান। আমার দোকানের সাথে থাকার স্বজনরা এর কারণ জানতে চান। তখন রুবেল বলেন হেলথ হেভেনে টেস্টগুলো করাতে হবে নইলে চিকিৎসক এ রিপোর্ট দেখবেন না। তখন আনোয়ারা বেগমের স্বজনরা বলেন আমাদের টেস্ট করানো হয়ে গেছে। এরপর রুবেল তাদের সাথে জোরাজুরি করতে থাকেন। পরে রুবেলের বিরুদ্ধে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার দেলোয়ার হোসেনের কাছে অভিযোগ দেন আনোয়ারা বেগমের স্বজনরা। এতে ক্ষুব্ধ হন রুবেল। তখন আনোয়ারা বেগমের স্বজনদের লাঞ্চিত করে। পরে আবাসিক মেডিকেল অফিসার বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন কে জানানোর জন্য বলেন। আনোয়ারা বেগমের স্বজনরা বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মনোয়ার হোসেন কে জানালে তিনি রুবেলকে তার কার্যালয়ে ডাকেন। সিভিল সার্জনের সামনে বসেই আনোয়ারা বেগমের স্বজনদের উপরে ক্ষিপ্ত হন রুবেল। তখন জেলা সিভিল সার্জন আনোয়ারা বেগমের স্বজনদের কাছে জানতে চান আপনাদের কাছে কোন ছবি কিংবা ভিডিও আছে কিনা। তারা অবাক হয়ে বলেন এমনটি করার কোন সময় পাইনি। এরপর সিভিল সার্জন পরবর্তীতে প্রমাণ নিয়ে আসার জন্য বলে বিষয়টি প্রথমবারের মতো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্ন অনুরোধ করেন। বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন বলেন বিষয়টি আমি শোনার সাথে সাথে জেলা সিভিল সার্জনের নিকট অভিযোগ দেয়ার জন্য বলেছি। কারণ তিনি এই হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মনোয়ার হোসেন বলেন অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দু’জনকেই আমি ডেকেছি। অভিযোগকারীর কাছে কোন ভিডিও ফুটেজ কিংবা ছবি না থাকায় কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে অবশ্যই প্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। জেনারেল হাসপাতালে গতকাল শনিবার সরজমিনে প্রতিবেদক এর সাথে কথা হয় বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে। তাদের সকলেরই অভিযোগ জেনারেল হাসপাতালে স্টাফরা জোরপূর্বক হাসপাতালসমূহের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে তাদের বাধ্য করে নিয়ে যান। অন্যথায় চিকিৎসকরা তাদের সেবা দিবেন না এমন হুমকিও দেন। সাইফুল ইসলাম ও সাবরিনা আক্তার তুলি নামের দুই রোগীর সাথে গতকাল কথা হয় হাসপাতাল কম্পাউন্ডে। তারা বলে এই হাসপাতালে দুই চিকিৎসক রয়েছেন যারা তাদের স্টাফদের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যতীত কোথাও টেস্ট করালে ওই রিপোর্ট দেখেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে বেশ কয়েকজন কর্মচারী জানান এখানে মোট চার জন চিকিৎসক রয়েছেন যারা সবচেয়ে বেশি রোগী দেখেন। এরা হলেন ডাক্তার একেএম মাসুদ হাসান ডাক্তার নাজমুল ইসলাম ডক্টর আশিকুর রহমান ও ডাক্তার এমদাদ উল্লাহ খান। এইচআর চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে সব সময় অবস্থান নেয় অফিস সহায়ক রুবেল ও সত্তার। রোগীরা চেম্বার থেকে বের হলেই তাদের জোরপূর্বক হেলো লাইফ লাইন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান এই ২ অফিস সহায়ক। বিষয়টি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সহ সকলেই জানেন। এরপর ওই দুই অফিস সহায়ক এর বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
|